ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের বিপজ্জনক টানাপোড়েন

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলে যাওয়ার ফলে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ট্রাম্পকে শান্তি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিলেও যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতি কঠোর নীতি বজায় রেখেছে।

গত ৪ মার্চ জেলেনস্কি ট্রাম্পের উদ্দেশে এক চিঠিতে লেখেন, ‘ইউক্রেন যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত। আমার দল ও আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃঢ় নেতৃত্বের অধীনে টেকসই শান্তি আনতে কাজ করতে রাজি।’ কিন্তু এই চিঠির পরও ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র সরবরাহ ফের চালু করেনি, বরং আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

৫ মার্চ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক গোয়েন্দা সহায়তা বন্ধ করে দেয়, যা যুদ্ধক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। একজন ইউক্রেনীয় সামরিক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ট্রাম্প যদি ধন্যবাদ চান, তবে আমরা তা মৃত ইউক্রেনীয় সৈনিকদের কবরের ওপর লিখবো।’

যুক্তরাষ্ট্রের আচরণে ইউরোপের দেশগুলো নিজেদের করণীয় ঠিক করতে তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা ইউক্রেনকে প্রতিরক্ষা সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ইউরোপের বড় দুই সামরিক শক্তি যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি ইউরোপীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার শক্তিশালীকরণে পৃথক সম্মেলন আয়োজন করেছে। তবে তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট। ফ্রান্সের এক মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যুক্তরাজ্যকে কিছুটা বিস্মিত করেছে।

৪ মার্চ জার্মানিতে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভরা প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে একমত হয়েছেন, যা অর্থনৈতিক বাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

তবে ইউরোপের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে একধরনের দ্বন্দ্বও স্পষ্ট। ইউরোপ একদিকে ইউক্রেনকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে শক্তিশালী করতে চায়, অন্যদিকে ট্রাম্প চান যুদ্ধের অবসান। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টায় ইউরোপ হয়তো আরও বড় কূটনৈতিক চাপে পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।


আমার বার্তা/জেএইচ