ক্ষমতায় গেলে ১৮০ দিনের কর্মপরিকল্পনা জানালো বিএনপি

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫, ১৮:২০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে ১৮০ দিনে (৬ মাস) কী করা হবে তার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশে রাজনৈতিক দল নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম ১০০ দিনে কী কী কাজ করবে, তার পরিকল্পনা প্রকাশ করে থাকে। জনগণের ক্ষমতায়নের দল হিসেবে বিএনপি বাংলাদেশে এমন একটি বাস্তবসম্মত সংস্কৃতি প্রবর্তন করতে চায়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের পর প্রথম ১৮০ দিনের মধ্যে বিএনপির লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নির্বাচনের আগেই নির্ধারণ করা হবে।

একইসঙ্গে এই ছয় মাসের পরিকল্পনার ভিত্তিতে একটি অ্যাকশন-ওরিয়েন্টেড রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হবে। বিভিন্ন সেক্টরে বিএনপি কী-কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, সেগুলোও স্পষ্টভাবে তুলে করা হবে।

বুধবার (৪ জুন) ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বিএনপি নেতা বলেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মানুষের আস্থা অর্জন এবং ভবিষ্যতের জন্য দৃঢ় ভিত্তি গড়তে প্রয়োজন স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। গতানুগতিকতা ছেড়ে সাহসী ও দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। তাহলেই জাতির জন্য আশা, আস্থা ও পুনর্গঠনের দিগন্ত উন্মোচন হবে।

>> শিক্ষাব্যবস্থা

প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের অর্থনৈতিক সুবিধা ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। দেশের ও প্রবাসী শিক্ষাবিদ, পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্লাম্বিং, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক্স, ডেন্টাল হাইজেনিস্ট, মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান ইত্যাদির স্বল্পমেয়াদি ‘ট্রেড কোর্স’ চালু করা হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাস্তবমুখী করতে এপ্রেন্টিসশিপ, ইন্টার্নশিপ এবং ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। জেলা পর্যায়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেটিভ বিজনেস আইডিয়া বাণিজ্যিকিকরণ করতে প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ায় সিড ফান্ডিং বা ইনোভেশন গ্র্যান্ট প্রদান করা হবে।

>> স্বাস্থ্য সেবা

রোগ প্রতিরোধকে প্রাধান্য দিয়ে টিকাদান, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং সচেতনতা তৈরির একাধিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, স্যানিটেশন এবং পুষ্টির উপর জনগণের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য স্পেশালাইজড ট্রেনিং স্কিম শুরু করা হবে।নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য আধুনিক পরিশোধন ব্যবস্থা ও বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী রিসার্ভার তৈরী করা হবে।

>> নারীর ক্ষমতায়ন

প্রায় প্রান্তিক চার কোটি পরিবারের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০ লক্ষ দরিদ্র গ্রামীণ পরিবারের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করা হবে। এই কার্ড মূলত পরিবারের নারী প্রধানের নামে ইস্যু করা হবে। তাদের প্রতিমাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। নারীদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। বিচারিক প্রক্রিয়ায় ধর্ষক-নিপীড়কদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। নারীদের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে ডেডিকেটেড সাপোর্ট সেল প্রতিষ্ঠা করা হবে। নারীদের স্বনির্ভরতা বাড়াতে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে যোগ্যতার ভিত্তিতে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে।

>> শহীদদের স্বীকৃতি

জুলাই গঅভ্যুত্থানে এবং ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সকল শহীদের তালিকা প্রস্তুত করে নিজ-নিজ এলাকায় তাদের নামে সরকারি স্থাপনার নামকরণ করা হবে। শহীদ পরিবারগুলোসমূহকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করা হবে। গণঅভ্যুত্থানে ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যেসব গণতন্ত্রকামী ব্যক্তি পঙ্গু হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন তাদেরকেও স্বীকৃতি ও চাকরির সহায়তা প্রদান করা হবে।

>> কৃষি খাত ও গ্রামীণ উন্নয়ন

কৃষকের নামে জমির পরিমাণ ও খতিয়ানসহ প্রয়োজনীয় তথ্যসংবলিত ‘ফার্মার্স কার্ড’ চালু করা হবে।কৃষকের কাছ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাষ্ট্র ন্যায্যমূল্যের ভিত্তিতে সরাসরি উৎপাদিত পণ্য ক্রয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং দেশব্যাপী কোল্ড স্টোরেজ তৈরির কাজ শুরু হবে।কৃষিজাত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ, মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে কৃষি খাতকে রফতানিমুখীন গড়ে তোলা হবে।এলাকাভিত্তিক ডাটাবেস তৈরির করা হবে। কৃষকের জমির ও উৎপাদিত ফসলের পরিমানের তথ্য-উপাত্ত নির্ণয় করে টার্গেটেড পলিসি সাপোর্ট দেওয়া হবে। বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য চাঁদাবাজি, মধ্যস্বত্বভোগী ও ফ্যাসিবাদের রেখে যাওয়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। দেশব্যাপী খাল খননের কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করা হবে।

>> শিল্প খাত

১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনোমির রোড ম্যাপে FDI-GDP লক্ষ্যমাত্রা দশমিক ৪৫% থেকে ২ দশমিক ৫% নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপি।  বিএনপি ২০৩৪ সালের মধ্যে জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করতে চায়। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি ট্যাক্সের লাগাম টেনে ধরা। শিল্প খাতের বিকাশে বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ করে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা হবে। বিনিয়োগ সহজ করতে, কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে ব্যাংকিং সাপোর্ট  নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ বাস্তবায়ন করা হবে।  নতুন শিল্প সৃষ্টির জন্য কৃষি, মৎস্য ও অন্যান্য উৎপাদনমুখী খাতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকল সহ আওয়ামী দুঃশাসনে বন্ধ হয়ে যাওয়া মাঝারি ও বৃহৎ শিল্পসমূহের তালিকা প্রস্তুত করে সেগুলো পুনরায় চালুর দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়া হবে।

>> তথ্যপ্রযুক্তি খাত

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নের জন্য দেশব্যাপী প্রোডাকশন ফেসিলিটি, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং ট্রেনিং প্রোগ্র্যাম হাতে নেয়া হবে। তাঁরা আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পণ্য বিশ্বব্যাপী বিক্রি করতে সক্ষম হবেন। বাংলাদেশে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, ইত্যাদি সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মের অফিস খোলার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ফ্রিল্যান্সার তরুণ-যুবকদের সুবিধার্থে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশে পেপাল এবং অন্যান্য পেমেন্ট মেথডসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম শুরু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং এবং ডাটা প্রসেসিংকে উৎসাহিত করার জন্য জেলা পর্যায়ে যোগ্যতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রম নেয়া হবে।

>> প্রবাসী কল্যাণ

প্রবাসী শ্রমিকদের জীবন, মর্যাদা ও কর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। বিমানবন্দর সহ সকল ক্ষেত্রে হয়রানিমুক্ত সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগে উৎসাহ, সুযোগ ও প্রণোদনা দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যে বিদেশের বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোকে গতিশীল করা হবে। দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

>> নগর ব্যবস্থাপনা

নারীদের সার্বক্ষণিক নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে প্রাথমিকভাবে ঢাকার বিভিন্ন রুটে ‘শুধুমাত্র নারী যাত্রী’ বাস চালু করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে সেখানে ড্রাইভার ও সহকারী হিসেবেও নারীরা থাকবেন। ট্রাফিক সমস্যার সমাধানে দেশ-বিদেশের বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

>> পরিবেশ ব্যবস্থাপনা

৫ বছরে ২৫ থেকে ৩০ কোটি বৃক্ষ রোপনের কর্মসূচি ইতিমধ্যে ঘোষিত হয়েছে। তৃনমূল থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত ব্যাপকভাবে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি ও বৃক্ষমেলা আয়োজন করা হবে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন এবং মহানগরের প্রতিটি থানায় উন্মুক্ত মাঠের সংখ্যা বাড়িয়ে পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একটি ‘গ্রিন এন্ড ক্লিন’ বাংলাদেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পলিথিন নিষিদ্ধ করে পাটজাত ব্যাগকে উৎসাহিত করা হবে। সকল ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ ও ‘সাস্টেইনেবল প্রোডাক্ট’কে উৎসাহিত করা হবে।

>> আইন-শৃঙ্খলা

ধর্ষণ, ছিনতাই, রাহাজানি, চুরি সহ সকল নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের মাধ্যমে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। যেকোনো মূল্যে বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।  মাঠপর্যায়ে পুলিশের মনোবল বৃদ্ধির জন্য ট্রেনিং, কনসালটেশন, মোটিভেশন এবং মনিটরিংসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

>> কর্মসংস্থানমুখী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার

বিএনপি’র প্রধান অঙ্গীকার - কর্মসংস্থান সৃষ্টি।সরকার গঠন করলে এক কোটি মানুষের জন্য নতুন কর্মের সংস্থান করবে। মূলত ১০টি খাতকে সার্বিক উন্নয়ন তথা কর্মসংস্থানের জন্য বিএনপি পরিকল্পনা তৈরি করেছে।

>> বেসরকারি খাতের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে বিএনপি সরকার বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করবে। এই কৌশল কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবে। নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো সহজীকরণ ও আমলাতান্ত্রিক বাধা কমানো: ব্যবসায় নিবন্ধন, কর আনুগত্য এবং লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সহজ করবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কোম্পানি নিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্সিং চালু করা হবে।

>> অবকাঠামো ও শিল্প অঞ্চলে বিনিয়োগ

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং শিল্প পার্ক স্থাপন ও সম্প্রসারণ করবে। ফলে বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে। উৎপাদনশীলতা বাড়বে। স্থানীয় শিল্পকে বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলায় সংযুক্ত হবে।

এছাড়াও পোশাক শিল্প রফতানিতে প্রধান ভূমিকা রাখলেও রপ্তানি বৈচিত্র্য আনা প্রয়োজন। ওষুধ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে মনোযোগ দেওয়া হবে। এতে অর্থনৈতিক ঝুঁকি কমবে। আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে ব্যাংকিং খাতের সুশাসন উন্নত করা হবে।

ব্যাংকিং খাতকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য সহজীকরণ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম বাড়ানোর মাধ্যমে ছোট ব্যবসার জন্য জামানতের ওপর নির্ভরতা কমানো হবে।

পুঁজিবাজার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ হিসেবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে কঠোর স্বছতার নিয়ম এবং স্বাধীন নিরীক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ কৌশল প্রণয়ণের অংশ হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস, সৌর, জলবিদ্যুৎ ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে বাংলাদেশের আদর্শ মিশ্রণ নির্ধারণ ও সিস্টেম-ভিত্তিক পরিকল্পনা করতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করবে। বাপেক্সকে শক্তিশালী করে গ্যাস, খনিজ অনুসন্ধানে গুরুত্ব দেয়া হবে।

>> নীল অর্থনীতি

বঙ্গোপসাগরের বিশাল সামুদ্রিক সম্পদকে টেকসইভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু সহনশীলতা অর্জনের লক্ষ্যে টেকসই সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সমুদ্রভিত্তিক শিল্প ও প্রযুক্তির উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও সামুদ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণ, উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন গবেষণা এবং উদ্ভাবন ও মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দেওয়া হবে।

বাণিজ্য সহজীকরণ ও শুল্ক পদ্ধতি উন্নয়নের জন্য শুল্ক শ্রেণিবিন্যাস ডিজিটাইজ করা হবে। আমদানি প্রক্রিয়া, বিশেষ করে মূল কাঁচামালের জন্য ক্লিয়ারেন্স দ্রুততর করবে। ব্যবসায়ীদের খরচ কমাবে। পাশাপাশি ডিজিটাল আর্থিক সেবার ব্যবহারও বৃদ্ধি করবে বিএনপি। 

এছাড়াও শক্তিশালী করপোরেট গভর্ন্যান্স ও কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা অনুশীলনে জোর দেওয়া হবে। ফলে বেসরকারি খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে।

পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) শক্তিশালীকরণে কাজ করবে বিএনপি।অবকাঠামো ও সরকারি সেবায় বেসরকারি বিনিয়োগ জোগাড়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও সবুজ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যাটফর্ম (বিসিডিপি) এর মতো প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করা হবে। জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন প্রকল্পে বিনিয়োগ আকর্ষণের প্রচেষ্টা নেয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি খাত একত্রে কাজ করবে।

ঋণ ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির জন্য দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার স্বার্থে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাজস্ব কৌশল প্রণয়ন, কাঠামোগত সংস্কার এবং প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমতা-ভিত্তিক টেকসই উন্নয়নের পথে গ্রহণ করা হবে। বিএনপি ঋণের বোঝা কমাতে ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বৃদ্ধির কৌশলও নির্ধারণ করেছে। সেজন্য ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল, ব্যয় অগ্রাধিকরণ ও দক্ষতাবৃদ্ধির কৌশল, স্বল্পমেয়াদি ঋণের ওপর নির্ভরতা হ্রাস, ঋণ-উন্নয়ন-বিনিময় কৌশল, অবৈধ ঋণ পর্যালোচনা ও বাতিলকরণ প্রক্রিয়া, রাজস্ব ব্যবস্থার যুগোপযোগীকরণ, কর কোড আধুনিকায়ন, প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ব্যবস্থা, সবুজ কর কাঠামো, কার্যকর ট্রান্সফার প্রাইসিং আইনের পাশাপাশি বাজেট প্রক্রিয়ার সংস্কার করা হবে।


আমার বার্তা/এমই