এত জীবন দেয়ার পর এখনো অসংগতি নিয়ে আলোচনা হবে কেন
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৫:২১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছে, স্বায়ত্তশাসন শাসন, গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ , ৯০’র ছাত্র আন্দোলন, এবং এই ২৪’র জুলাই আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনে অনেক জীবন দিয়েছে। এত জীবন দেয়ার পর এখনো অসংগতি নিয়ে আলোচনা হয়, এটা কেন হবে? আর কত জীবন দেবে, লড়াই করবে এদেশের মানুষ।
শনিবার (০৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ) তে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ কতটুকু সুরক্ষা দেয়?’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা। সেমিনার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, মানুষ প্রাইমারি স্কুল থেকে হাই স্কুলে উঠে, হাই স্কুল থেকে কলেজে যায়, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়, আস্তে আস্তে মানুষ উন্নত হয়। আস্তে আস্তে মানুষের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। আর আমরা বারবার যেন সাপ-লুডুর মত অনেকদূর এগিয়ে যাই আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি, আবার আগানোর চেষ্টা করি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের দেশে শ্রম আইনে আছে, প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগ পত্র দিতে হবে, কিন্তু আমাদের দেশে যত শ্রমিক আছে তার ২০-২৫ শতাংশ শ্রমিকও নিয়োগ পত্র পায় না। তাদের গ্র্যাচুইটি, সুবিধা তার কোনটাই দেয়া হয় না, যা শ্রম আইনে লেখা আছে। যারা শ্রমিককে কম মজুরি দেয় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি বা অভিযোগ দেয়ারও কোনো মেকানিজম নেই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের নারী, শিশু, যুবক, শ্রমিক সবার জন্য আইন আছে। কিন্তু তারা কি আইনের বিষয়ে কিছু জানেন, বোঝেন, বা সুফল ভোগ করতে পারেন? প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের যারা প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের উচিত সবাইকে আইন বুঝিয়ে দেয়া এবং আইনের সুফল বোঝানো। আর যদি তা না করা হয়, সাধারণ মানুষ সেই অন্ধকারেই থেকে যাবে।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে তারা যদি আইন প্রয়োগে কোনো ভুল করে, ইচ্ছাকৃত ভুল এবং তারা যদি অন্যায়ভাবে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান কোথায়? সংস্কার কমিশন আলাপ হচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আমাদের যে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলি বিশাল ক্ষমতার অধিকারী যারা, তাদের কি হবে? হয় তারা পদত্যাগ করবে কিংবা তাদেরকে অবসর দেওয়া হয়। কিন্তু একজন সাধারণ মানুষ একটা দেশের বা অন্য একটা মানুষের কতই বা ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু যারা বড় বড় পদে বসে আছে, যারা বড় বড় দায়িত্ব পালন করছে, তারা তো এই দেশ এবং দেশের মানুষের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এই যে সুরক্ষা আইন, এসব আইনের যারা কার্যকর করবে, যারাই ক্ষমতার অধিকারী হবে রাষ্ট্রের মাধ্যমে, তাদের প্রত্যেককেই দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহিতার আওতায় রাখা। আর সে কারণে তারা যদি তাদের দায়িত্ব পালনটা অবহেলা করে কিংবা অপরাধমূলক কোনো কাজে যুক্ত হয়, তাহলে তাদের জন্য শাস্তি হয় সেই বিধান যেন প্রত্যেক আইনে থাকে এরকম একটা দাবিও আমাদের থাকা দরকার। আর না হলে আইনের ভাষা যত সুন্দরই করি, আমাদের যত আকাঙ্ক্ষা আমাদের আইনের কাগজ দ্বারা লিপিবদ্ধ সাধারণ মানুষের কল্যাণ হবে না।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আব্দুল হাই সিকদার সহ প্রমুখ।
আমার বার্তা/এমই