প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলায় সরকারের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে: নাহিদ

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক, যারা এই ঘটনাটা সেই রাতে ঘটিয়েছে বা যারা প্রথম আলোসহ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা করেছে, তারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্লোগানগুলোকে ব্যবহার করেছে। শরিফ ওসমান হাদির নাম ব্যবহার করেছে। আমাদের স্লোগানগুলোকে ব্যবহার করে তারা সেখানে আক্রমণ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজকে যেই পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছি, এটা দুর্ভাগ্যজনক। কারণ এই পুরো পরিস্থিতির সঙ্গেই আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান এবং তার পরবর্তী সময়ে এই পরিবেশ এবং যেই বাংলাদেশ আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম আমরা সেই দিকে আগাচ্ছি না।’

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় নাহিদ ইসলাম এসব মন্তব্য করেন। দেশে চলমান ‘মব ভায়োলেন্সের’ প্রতিবাদে সংবাদপত্র সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ এবং নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) যৌথভাবে এই সভা আয়োজন করে।


নাহিদ বলেন, ‘আমরা বলেছি, এ ঘটনায় সরকারের ভিতরের একটা অংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এটার পক্ষে সম্মতি তৈরি করা হয়েছিল অনেকদিন ধরেই। এটার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যাকআপও আছে। এই তিনটা ঘটনা একসঙ্গে না ঘটলে এত বড় সাহস সেই রাতে কারও পক্ষে করা সম্ভব হতো না। কয়েক হাজার মানুষ গিয়ে এটা ঘটিয়েছে এরকমও না। ফলে পুরো ঘটনাটাই পরিকল্পিত ছিল। ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে কী কী ঘটানো হবে, সেটার একটা চক্রান্ত, পরিকল্পনা আগে তৈরি হয়েছে। ঘটনাগুলো দেখে আমাদের কাছে এটাই মনে হয়েছে।’

এনসিপির নেতা বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের সবারই এটার কিছু দায় আছে। আমাদের অনেক বেশি দায় আছে। যারা আমরা জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ব্যক্তিগতভাবে আমি তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলাম। আমাদের জন্য এটা আরও দুর্ভাগ্যজনক।’

নাহিদ আরও বলেন, ‘আজকে আমরা শব্দটা ব্যবহার করছি মব ভায়োলেন্স। এই শব্দটির সঙ্গে প্রথম দিকে একমত হতাম না বা আমরা এটার বিরোধিতা করতাম। কারণ আমরা যাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম, তাদের পক্ষ থেকেই পুরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে প্রথম থেকে বলা হয়েছে মব। ফলে আমরা বলেছি যে এটা মবোক্রেসি না।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান, বিপ্লব, বিপ্লব পরবর্তী পরিস্থিতিতে দেশে অনেক কিছু হয়। তখন পুলিশ ছিল না। মানুষের অনেক ক্ষোভ ছিল। ১৬ বছরের ক্ষোভ ছিল। কিন্তু এখন দেড় বছর পার হয়ে গিয়েছে। এখন যেটা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণভাবে পরিকল্পিত অপরাধ হচ্ছে এবং এটা পুরো দেশের রাজনীতি ও নির্বাচন ভাবনাকে একদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই পরিকল্পনা চলছে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের সবার নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব নেওয়া উচিত। কারা সে রাতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে এটা খুবই স্পষ্ট। কারা সেটার পক্ষে সমর্থন করেছে। কারা সেই রাতে সেখানে গিয়েছে, লেখালেখি করেছে। আমাদের সবাই মিলে সরকারকে বাধ্য করতে হবে এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত এবং বিচার করতে। একই সঙ্গে শরিফ ওসমান হাদিকেও যারা গুলিবিদ্ধ করল, প্রকাশ্যে ঢাকা শহরে একজন এমপি পদপ্রার্থী এবং জুলাইয়ের মুখ সেই বিষয়টাকেও আমাদের সুরাহা করতে হবে।’

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় সভায় আরও আছেন— সম্পাদক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভাপতি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, মানবাধিকার কর্মী রেহনুমা আহমেদ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ড. ইফতেখারুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।


আমার বার্তা/এমই