সিভিল এভিয়েশনের কর্মচারী রফিক ও তার ভাই জাফরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

  স্টাফ রিপোর্টার:

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিভিল এভিয়েশন)-এর টেলিফোন অপারেটর রফিক আহমেদ ও তার ভাই এমএলএম ব্যবসায়ী জাফর আহমেদের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, ভুয়া ইমাম খতিব সেজে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন এবং কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী ও দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মাওলানা লোকমান জানান, তাকে সিভিল এভিয়েশন নিয়ন্ত্রিত আমতলা জামে মসজিদে ইমামতির চাকরি দেওয়ার কথা বলে রফিক ৮ লাখ টাকা নেন। পরে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি না দেওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হলে সাংবাদিকদের চাপের মুখে রফিক মাত্র ২ লাখ টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকার বিষয়ে তারা একটি ভিডিও ধারণ করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালান যে সমস্ত টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

লোকমান জানান, রফিক ও জাফর তাকে এবং পত্রিকার সম্পাদককে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিএনপিপন্থী কিছু সন্ত্রাসী ব্যবহার করে মব গঠন করে হুমকি দিতে থাকে। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

জানা গেছে, রফিক দীর্ঘ ১৭ বছর সিভিল এভিয়েশনের টেলিফোন অপারেটর পদে কর্মরত থেকেও ১নং আমবাগান জামে মসজিদে ইমাম ও খতিব হিসেবে অবৈধভাবে পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ আয় করেছেন। এই অর্থেই তার ভাই জাফর গড়ে তোলে ভুয়া ডেভলপার কোম্পানির নামে এমএলএম ব্যবসা এবং হাজারো মানুষকে নিঃস্ব করে।

বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা যায়, রফিক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে নিজেকে “সরকারি ইমাম ও খতিব” হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং মসজিদ দখল করে সরকারি কোয়ার্টার ও ইমাম খতিবের সব সুবিধা ভোগ করতেন। যদিও তার আসল পদবি ছিল টেলিফোন অপারেটর।

রফিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়ার পর সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ তাকে শোকজ করে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বদলি করে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। কিন্তু রফিক সেখানে যোগ না দেওয়ায় ২০২১ বিধি ৪৯(গ) অনুযায়ী তাকে "পলাতক" ঘোষণা করে আদেশ জারি করা হয়।

এদিকে রফিক একটি আবেদন করেন যাতে তিনি টেলিফোন অপারেটরের পরিবর্তে আমবাগান জামে মসজিদের “সিনিয়র ইমাম” হিসেবে নিয়োগ পান। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির এক নগ্ন উদাহরণ।

রফিকের টাকার জোরে তার ভাই জাফরও রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় একটি মসজিদের ইমামতি শুরু করেন। এরা দু’জনই দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় পোশাক ও চেহারার আড়ালে রাজনৈতিক ছত্রছায়া ব্যবহার করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।

এলাকাবাসীর অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সহ অন্যান্য দপ্তরে তদন্ত হলে প্রকাশ পাবে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জনগণ ও ভুক্তভোগীরা দাবি জানাচ্ছেন, যারা দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের ছত্রছায়ায় দুর্নীতির সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।


আমার বার্তা/এমই