মাদারীপুরে আদালতের নির্দেশে দাফনের দেড়মাস পর কবর থেকে সৈয়দ তুহিন হাসান নামে এক ঠিকাদারের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর পৌর কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
সৈয়দ তুহিন হাসান ডাসার উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল হোসেনের বড় ছেলে। শহরের কুকরাইল এলাকায়ও তার পরিবারের বাড়ি রয়েছে।
জানা যায়, গত ৩১ জুলাই মাদারীপুর শহরের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের একটি নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে যান ঠিকাদার সৈয়দ তুহিন হাসান। কাজ শেষে ফেরার সময় রাত ১০টার দিকে ভবন থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয় বলে স্বজনদের জানানো হয়।
বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করে মরদেহ দাফন করে পরিবার। পরবর্তীতে স্বজনরা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন পূর্ব শত্রুতার জের ও তুহিনের সঙ্গে থাকা দেড় লাখ টাকা লুট করে নির্মাণাধীন ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে ঠিকাদারকে। এই ঘটনায় ন্যায় বিচারের স্বার্থে গত ৬ আগস্ট মাদারীপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ধলু মোল্লাসহ সাতজনের নামে একটি হত্যা মামলার আবেদন করেন।
পরে আদালতের বিচারক শুনানি শেষে সদর মডেল থানা পুলিশকে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর নির্দেশও দেন। এরইপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুমের নেতৃত্বে মরদেহটি উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত তুহিনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বিচার চাই। আদালত ন্যায় বিচার করবেন বলে আশা করছি।’
তুহিনের ছোটভাই তুষার হাসান বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুটি প্রথমে স্বাভাবিক মনে হলেও তথ্য প্রমাণ ও বেশকিছু সাক্ষীর মাধ্যমে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হই। পরে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মরদেহ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের পর হত্যার ন্যায় বিচার পাবো। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের এমন বিচার হওয়া উচিৎ যা দেখে অন্য কেউ আর পরবর্তীতে এমন ঘটনা ঘটাতে না পারে।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে সৈয়দ তুহিন হাসানের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। থানা পুলিশ মরদেহের সুরতহালও প্রস্তুত করেছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের বাবা মনে করেছেন তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে, এজন্য তিনি আদালতে এমন আবেদন করে মামলা করেছেন।’
আমার বার্তা/এল/এমই