অনেকের কাছে সেদিন শুভ সকাল হলেও এই পরিবারের তিনজনের কাছে সকালটি ছিল অশুভ। কে জানত গ্রামের একদল লোক তাঁদের পিটিয়ে মৃত্যুপথের যাত্রী হিসেবে পাঠিয়ে দেবে এই জগৎ থেকে। গত বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়িতে মা এবং তাঁর ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মোবাইল ফোন চুরির জেরে প্রকাশ্য পিটুনিতে প্রাণ হারান খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৮) এবং মেয়ে জোনাকী আক্তার (৩২)।
নিহত রাসেল মিয়ার স্ত্রী মীম আক্তার বলেন, ‘এমন ঘটনা শোনার পরও আমি বিশ্বাস করতে পারিনি মানুষ মানুষকে এভাবে পিটিয়ে মারতে পারে।’ ঘটনার পর কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) নাজির আহমেদ খান বলেছিলেন, কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তাকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করার কথা। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। তবে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গত রোববার ভোরে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে গ্রিনল্যান্ড লিমিটেড কারখানায় ১৯ বছরের যুবক শ্রমিক হৃদয়ের জীবনপ্রদীপ নিভেছে পিটুনিতে। চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। থানায় হত্যা মামলার পর চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শুকতার বাইদ গ্রামের আবুল কালামের ছেলে হৃদয় কারখানায় মেকানিক্যাল মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। হৃদয় কি জানতেন এভাবে তাঁর মৃত্যু হবে?
এভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘মব সন্ত্রাস’ চলছে। তাতে দেশের সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। ভুক্তভোগীরা আছে আতঙ্কে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এ অবস্থায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজনীতিবিদ, মানবাধিকারকর্মীরা।
সরকারের উপদেষ্টারা কয়েক মাস ধরে মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মাঝেমধ্যে উদ্যোগ দেখা গেলেও মব সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি।
গবেষণা সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত জুন পর্যন্ত ১০ মাসে ২৫৩টি মব সন্ত্রাস ঘটে। এতে ১৬৩ জন নিহত এবং ৩১২ জন আহত হয়।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত জুনে দেশে অন্তত ৪১টি গণপিটুনির ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়। গুরুতর আহত হয় ৪৭ জন। গণপিটুনির শিকার ৩০ জনকে আহত অবস্থায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ডাকাতি, চুরি, খুন, ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, কটূক্তি প্রতারণা ও অপহরণের অভিযোগ এনে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে তাদের।
এমএসএফ মনে করে, আইন অবজ্ঞা করে মব সহিংসতা তৈরি করে সমাজে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে এক ভয়াবহ পরিবেশ তৈরিতে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দায়িত্ব।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) গণপিটুনিতে ৭৮ জন নিহত হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চার মাসে গণপিটুনির ঘটনায় ৭৫ জন নিহত হয়। হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) হিসাবে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত মে পর্যন্ত ৯ মাসে মব সন্ত্রাস ঘটেছে ২০২টি। এসব ঘটনায় ১৩১ জন নিহত হয়েছে। এ সময়ে আহত হয় ১৬৫ জন।
মূলত বিশৃঙ্খল জনতা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়ে সহিংসতা চালালে তাকে মব জাস্টিস বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার ভায়োলেন্স বলা হচ্ছে। সামাজিক অস্থিরতা, আইনের শাসন না মানা, রাজনৈতিক বিরোধ, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অর্থনৈতিক দুরবস্থাসহ নানা কারণে একে অন্যকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর প্রবণতা, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে আইন না মানার প্রবণতায় গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে বলে অপরাধ বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সংঘটিত মব সন্ত্রাস বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের ওপর হামলা ও গণপিটুনির ঘটনা বেশি ঘটছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মব তৈরি করে হামলা চালানো হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে পেশাদার অপরাধী ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও মব তৈরি করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘মব সন্ত্রাস বন্ধ হচ্ছে না। আবার মব নিয়ন্ত্রণে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, সেই ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করা হচ্ছে না। মব সন্ত্রাস নিয়ে সরকার বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী বিভিন্ন আদেশ-নির্দেশ জারি করছে, কিন্তু মব সন্ত্রাস তৈরিকারীরা এগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। আর রাজনৈতিক পরিচয়ে যেসব মব তৈরি করা হচ্ছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দলের পক্ষ থেকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে এটি বন্ধ করা সম্ভব।’
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম গতকাল শুক্রবার বিকেলে বলেন, ‘দেশে মব ভায়োলেন্স নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একজন মানুষকে মেরে ফেলা হবে বা বড় ক্ষতি করা হবে, সেটা কোনোভাবেই হতে পারে না। অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে সমাজে শান্তি ফেরানো যায়। তবে পুলিশের একার পক্ষে মব সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন, এ ক্ষেত্রে সবার সম্মিলিত প্রয়াস দরকার।’
পুলিশের ওপরও মব ভায়োলেন্স হচ্ছে স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘যারা পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করছে তাদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।’
দেশে গত ছয় দিনে সন্দেহভাজন ছয় ব্যক্তি গণপিটুনিতে নিহত হন। সর্বশেষ রাজধানীতে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে আল আমীন নামের এক তরুণকে রাস্তা থেকে ধরে ছিনতাইকারী সন্দেহে পিটুনি দেয় একদল লোক। এরপর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, আলামিন নামের এক তরুণকে ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যা করে একদল লোক। এই পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত রবিবার ধর্ম অবমাননার অভিযোগে লালমনিরহাটে সেলুনের কর্মী পরেশ চন্দ্র শীল (৬৯) এবং তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে (৩৫) গণপিটুনি দিয়ে সেলুনে আটকে রাখা হয়।
গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরায় সাবেক সিইসি কে এম নুরুল হুদাকে উচ্ছৃঙ্খল জনতা মারধর ও চরমভাবে নাজেহাল করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছিলেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব সৃষ্টি করা হয়েছে, তা কাম্য নয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ৬ মে গুলশানে হেনস্তা করা হয় ভাস্কর রাসাকে। গত ১৩ মে রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়। গত ২০ মে রাতে ধানমণ্ডির ৪ নম্বর সড়কে মব তৈরি করে হাক্কানী পাবলিশার্সের মালিক গোলাম মোস্তফার বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করা হয়।
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে গত বুধবার মানসিক প্রতিবন্ধী শামীম হোসেনকে কুপিয়ে ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুরে শামীম বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নিহতের বাবা সাইফুল এসিআই ফুড লিমিটেড কারখানার পেছনের একটি ডোবা-জঙ্গলের ভেতর ছেলের মরদেহ দেখতে পান। ধারণা করা হচ্ছে, আলামত নষ্ট করার জন্য তাঁর শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
গত রোববার ডিএমপি সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ‘মব সন্ত্রাস ঠেকাতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
>> মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিএনপির কড়া বার্তা : সম্প্রতি বিএনপির উচ্চ মহল থেকে মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে তা দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জন্য বার্তা বলে মনে করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। দলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ৫ আগস্টের পর থেকে সারাদেশে বিভিন্ন পক্ষের প্রশ্রয়ে বিরোধী পক্ষকে হেনস্তা, বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তখনই বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়েছিল, এখন তা আবারও স্পষ্ট করা হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘মব সন্ত্রাস কোনো সভ্য সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধের বিচার হবে আদালতে, রাস্তায় নয়। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব। বিএনপি এই অপশক্তির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকার তার দায়িত্ব কতটুকু পালন করছে, সেই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরও মব সন্ত্রাস হয়েছিল। তখনো এর প্রতিকার করেনি তখনকার সরকার। ফলে দেশে অরাজকতা তৈরি হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও মব সন্ত্রাস দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না।
>> আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ বাম জোট : পটিয়া, মুরাদনগর, লালমনিরহাট, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে চলা মব সন্ত্রাস, নারী-শিশু নির্যাতন, হত্যা ও হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে জোটের কেন্দ্রীয় নেতারা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং সরকারের নীরব ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রামের পটিয়ায়, কুমিল্লার মুরাদনগরে, লালমনিরহাট থানা এলাকায় ও ফরিদপুরে ব্যবসায়ী এ কে আজাদের বাসভবনে মব হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে মুরাদনগরে মা-ছেলেসহ বহু মানুষকে পিটিয়ে হত্যা এবং নারী-শিশুদের ওপর বর্বর নিপীড়নের ঘটনায় দেশবাসী আতঙ্কিত।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
>> প্রতিবাদ সমাবেশ : ‘নতুন আপদের নাম এখন মব সন্ত্রাস। এতে আতঙ্কিত, ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে দেশবাসী।’ গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের এখন প্রধান কাজ ‘মব’ বন্ধ করা। এটি বন্ধ করা না গেলে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
প্রধান বক্তা ‘সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন’-এর প্রধান উপদেষ্টা মুজিব রহমান বলেন, সারাদেশে আজ ‘মব’ আতঙ্ক। সরকারের এখন প্রধান কাজ মব বন্ধ করা, মানুষের আইনের অধিকার নিশ্চিত করা, বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা।
>> বিয়ের অনুষ্ঠানে মিছিল : গতকাল রাতে চট্টগামের চিটাগং ক্লাব লিমিটেডে আওয়ামী লীগ নেতা বোয়ালখালীর ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল হকের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে একদল লোক মিছিল করে। এ সময় তারা ক্লাবের মূল ফটকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তারা জানায়, আওয়ামী নেতা জাহিদুলের নামে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে, তাই তাঁকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করতে এসেছে। এ সময় দেখা গেছে, ক্লাব থেকে বেরোনোর সময় প্রতিটি গাড়িতে তারা খুঁজতে থাকে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল আছেন কি না। তাঁকে পেলে ধরিয়ে দেবে বলে তারা জানায়।
দেশ আজ এক কঠিন পরীক্ষা সামনে পেয়ে দাঁড়িয়ে যে, যেখানে মব সন্ত্রাস ও আইনশৃঙ্খলার শিথিলতা সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলাকে বিপন্ন করে তুলছে। দায়িত্বশীল সকলেই চাইছেন দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, যাতে সাধারণ মানুষ নিরাপদে জীবন যাপন করতে পারে এবং সমাজে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
এভাবেই মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর ও সুসংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা না হলে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। - সূত্র : কালের কণ্ঠ
আমার বার্তা/এল/এমই