
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থি ছয় ডিনের পদত্যাগের দাবিতে ডিন কমপ্লেক্সে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে তালা দেওয়া শুরু করেন তারা। জানা যায়, এদিন একাধিক বিভাগের শিক্ষক ক্লাসে উপস্থিত ছিলেন না।
রাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) জিএস সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘আমরা গত তিন মাসে শিক্ষার্থীদের সংগ্রহ করা ডকুমেন্টের ভিত্তিতে একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করবো। ওই তালিকায় জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের তথ্য থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামীপন্থি ডিনদের পদত্যাগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও কেউ ক্যাম্পাসে নেই এবং কারও ছুটির বৈধ অনুমোদন পাওয়া যায়নি, যা স্পষ্টতই নিয়মবহির্ভূত। ছুটি ও ক্লাস ব্যবস্থাপনায় শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিতর্কিত শিক্ষক নিয়োগ এবং হত্যা মামলার আসামি হয়েও শিক্ষক হিসেবে বহাল থাকা আমরা মেনে নিতে পারি না। রাজনৈতিক পরিচয় নয়, ন্যায়বিচারই আমাদের দাবি।’
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য আকিল বিন তালেব বলেন, ‘বিপ্লব-পরবর্তী প্রশাসনের কাছে আমরা ধারাবাহিকভাবে দাবি জানিয়ে আসছি— বিপ্লবের গতি অব্যাহত রাখা এবং বিপ্লবীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। অথচ ঢাকার মতো জায়গায় দিনের বেলায় হাদি ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও আওয়ামীপন্থিরা রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেও ডিনসহ সিন্ডিকেটের ছয় জন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আওয়ামী লীগপন্থি, যারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন। তাদের মেয়াদ শেষ হলেও অপসারণ করা হয়নি। এ কারণেই আমরা ডিনদের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছি। অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এই তালা খোলা হবে না। পাশাপাশি যারা তাদের প্রতি তথাকথিত সুশীলতা দেখাচ্ছেন, তাদেরও পদত্যাগ করতে হবে। আর কোনও নমনীয়তা দেখানো হবে না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান জানান, সালাউদ্দিন আম্মারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট থেকেই তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এবং শিক্ষকদের প্রতি যেন কোনও অসৌজন্য বা ক্ষতি না হয়, সে উদ্দেশ্যেই তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
প্রক্টর বলেন, ‘ডিনদের বিষয়ে উত্থাপিত দাবিটি উপ-উপাচার্যের এখতিয়ারভুক্ত। সংশ্লিষ্ট ডিনদের মেয়াদ ১৭ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী উপ-উপাচার্য চাইলে তাদের পুনরায় দায়িত্ব দিতে পারেন, অন্য কাউকে দিতে পারেন অথবা নিজেই দায়িত্বে থাকতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সবার মর্যাদা রক্ষা করাই প্রশাসনের লক্ষ্য।’
এর আগে গত রাতে জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে আওয়ামীপন্থি ডিনদের পদত্যাগ ও ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের অপসারণের দাবিতে ‘অপারেশন জিরো টলারেন্স ফর ফ্যাসিজম’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
আমার বার্তা/এমই

