নিম্নকক্ষ হবে আসনভিত্তিক এবং উচ্চকক্ষ নির্বাচন হবে পিআর পদ্ধতিতে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘নিম্নকক্ষ হবে আসনভিত্তিক এবং উচ্চকক্ষ হবে পিআর পদ্ধতিতে। দুটিরই ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আছে। তবে আমরা মনে করি, এটি প্রবর্তন করা দরকার।’
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার সময় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বদিউল আলম আরও বলেন, আমরা আশাবাদী যে, ঐক্যমত্যের মাধ্যমেই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। কিছু কিছু বিষয়ে ঐকমত না হলেও আমাদের নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতেই হবে এবং নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। তার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তোরণের পথ প্রশস্ত হবে। পিআর পদ্ধতি এবং আসনভিত্তিক পদ্ধতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক নিয়ে কথা হচ্ছে। সবার সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে সফল নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। নির্বাচন কমিশন ও সংবিধান কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা সংস্কারের প্রস্তাব করেছি।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারবো। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তার মাধ্যমে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐক্যমত) মনির হায়দার তার বক্তব্যে বলেন, ৭১ ও ২৪ দুটোই মুক্তির চেতনা। সব যুদ্ধকে ৭১ কিংবা ৬৫’র মত ভারত-পাকিস্থান যুদ্ধের মত মনে করা যাবে না। এখনকার যুদ্ধে কম মানুষ প্রাণ হারায়। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়। ২৪ সালের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে একটি পক্ষ পরাজিত হয়েছে। সেই পক্ষটি মাফিয়া ফ্যাসিস্ট। মাফিয়া ফ্যাসিস্ট জনগণের কাছে পরাজিত হয়েছে। তৎকালীন মাফিয়া ফ্যাসিস্ট সরকার সমস্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীকে কব্জায় নিয়ে জনগণের ওপর লেলিয়ে দিয়েছিলো। যারা ২৪ সালের গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। পৃষ্ঠপোষকতা কিংবা মদদ দিয়েছিলো তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করাটাই নিরপেক্ষতা। আগে আমরা ততটুকু অধিকার পেতাম যতটুকু দয়া করে দেওয়া হতো। আমার যতটুকু অধিকার আমার মত আরেকজন নির্ধারণ করে দিত। এভাবে মানুষজন জিম্মিদশায় ছিলো। এমন এক শাসক গোষ্ঠী আমাদের ওপর ছিলো তারা শুধু অধিকারই কেড়ে নেয়নি নানা রকম নির্যাতন নিপীড়ন করেছিলো।
গাংনীর মতবিনিময় সভায় দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী তাজিমা হোসেন মজুমদার, সুজনের মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ জাকির হোসেন, গাংনী উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এএসএম সায়েম পল্টু, গাংনী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ স্বপন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্ট, বিএনপি নেতা আব্দাল হকসহ অন্যরা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।
এদিন বিকেলে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার।
আমার বার্তা/এমই